সুকুমার রায়ের গ্রীষ্মের কবিতা

 গ্রীষ্ম 

রৌদ্র ঝলে আকাশতলে অগ্নি জ্বলে জলেস্থলে।
ফেল্ছে আকাশ তপ্ত নিশাস ছুট্ছে বাতাস ঝলসিয়ে ঘাস,

ফুলের বিতান শুক্নো শ্মশান যায় বুঝি প্রাণ হায় ভগবান।
দারুণ তৃষায় ফির্ছে সবায় জল নাহি পায় হায় কি উপায়,

Grisma Kal Kabita


তাপের চোটে কথা না ফোটে হাঁপিয়ে ওঠে ঘর্ম ছোটে।
বৈশাখী ঝড় বাধায় রগড় করে ধড়্ফড়্ধরার পাঁজর,

দশ দিক হয় ঘোর ধূলিময় জাগে মহাভয় হেরি সে প্রলয়,
করি তোলপাড় বাগান বাদাড় ওঠে বারবার ঘন হুঙ্কার,

শুনি নিয়তই থাকি থাকি ওই হাঁকে হৈ হৈ মাভৈ মাভৈঃ।

ছোটদের সুকুমার রায় ৮ কবিতা 

গ্রীষ্ম ( এল বৈশাখ

 


এল বৈশাখ, নামে গ্রীষ্ম,
খাইখাই রবে যেন ভয়ে কাঁপে বিশ্ব !

চোখে যেন দেখি তার ধুলিময় অঙ্গ,
বিকট কুটিলজটে ভ্রুকুটির ভঙ্গ,

রোদে রাঙা দুই আঁখি শুকায়েছে কোটরে,
ক্ষুধার আগুন যেন জ্বলে তার জঠরে !

মনে হয় বুঝি তার নিঃশ্বাস মাত্রে
তেড়ে আসে পালাজ্বর পৃথিবীর গাত্রে !

Bengali poem Grisma by Sukumar Roy



ভয় লাগে হয় বুঝি ত্রিভুবন ভস্ম-
ওরে ভাই ভয় নাই পাকে ফল শস্য !

তপ্ত ভীষণ চুলা জ্বালি নিজ বক্ষে
পৃথিবী বসেছে পাকে, চেয়ে দেখ চক্ষে,-

আম পাকে, জাম পাকে, ফল পাকে কত যে,
বুদ্ধি যে পাকে কত ছেলেদের মগজে !



গ্রীষ্ম (সর্বনেশে গ্রীষ্ম


সর্বনেশে গ্রীষ্ম এসে বর্ষশেষে রুদ্রবেশে
আপন ঝোঁকে বিষম রোখে আগুন ফোঁকে ধরার চোখে।

তাপিয়ে গগন কাঁপিয়ে ভুবন মাত্ তপন নাচল পবন।
রৌদ্র ঝলে আকাশতলে অগ্নি জ্বলে জলে স্থলে।

ফেল্ছে আকাশ তপ্ত নিশাস ছুটছে বাতাস ঝলসিয়ে ঘাস,
ফুলের বিতান শুকনো শ্মশান যায় বুঝি প্রাণ হায় ভগবান।

দারুণ তৃষায় ফিরছে সবায় জল নাহি পায় হায় কি উপায়,
তাপের চোটে কথা না ফোটে হাঁপিয়ে ওঠে ঘর্ম ছোটে।

বৈশাখী ঝড় বাধায় রগড় করে ধড়্ফড়্ ধরার পাঁজর,
দশ দিক হয় ঘোর ধুলিময় জাগে মহাভয় হেরি সে প্রলয়।

করি তোলপাড় বাগান বাদাড় ওঠে বারবার ঘন হুংকার,
শুনি নিয়তই থাকি থাকি ওই হাঁকে হৈ হৈ মাভৈ মাভৈঃ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন