কবিতা অলাতচক্র
মণীন্দ্র গুপ্ত :
মারা যাবার পরে সে রাস্তা চিনতে পারছিল না।
থতমত খেয়ে সে পারকিনসনের রোগীর মতো
স্পাইরাল সিঁড়ি বেয়ে যেখানে এসে নামল
সে জায়গাটা গ্র্যাণ্ড হোটেলের পিছনের সরু উঠোণ-
ধোবিখানার সাবানজলের দিন রাত ভেজা আর
পাম্পঘরের আরশোলার বাসা, লুব্রিক্যান্টে পিছল অন্ধকার,
সদ্য ছড়ানো ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ ।
সেদিন ভোরে দেখি উঠে বৃষ্টি বাদল গেছে ছুটে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তার মনে হল, নরকভোগের পক্ষে এই জায়গাটাই প্রশস্ত।
হাজত থেকে বার করে আসামীকে যেমন কোর্টে তোলে
তেমনি তাকে প্রায়ই হোটেলের একটি ছায়াময় কক্ষে পাঠানো হয়।
সেখানে এক কিশোরী পরিচারিকা কার্পেটে বসে
একা একা দিনরাত টিভি দ্যাখে। বীণাবাদিকাদের চেয়ে
টিভি-দেখা পরিচারিকারাই বেশ স্ফুরাধরা।
আয়ত কৌচে এলিয়ে বসে সে দাসীটিকে দেখতে থাকে
আর তার পূণ্যভোগ ফিল্মের রীলের মতো মৃদু কিরকির শব্দে গুটোয়।
পাঁচ হাজার বছরের পিরামিডের মৌন ক্রমশ চর্তুদিকে ঘনিয়ে আসে।