অবাক কান্ড
শুন্ছ দাদা! ঐ যে হোথায় বদ্যি বুড়ো থাকে,
সে নাকি রোজ খাবার সময় হাত দিয়ে ভাত মাখে?
শুন্ছি নাকি খিদেও পায় সারাদিন না খেলে?
চক্ষু নাকি আপনি বোজে ঘুমটি তেমন পেলে?
চল্তে গেলে ঠ্যাং নাকি তার ভূয়েঁর পরে ঠেকে?
কান দিয়ে সব শোনে নাকি? চোখ দিয়ে সব দেখে?
শোয় নাকি সে মুণ্ডটাকে শিয়র পানে দিয়ে?
হয় না কি হয় সত্যি মিথ্যা চল্ না দেখি গিয়ে!
আলোছায়া
হোক্না কেন যতই কালো
এমন ছায়া নাইরে নাই-
লাগ্লে পরে রোদের আলো
পালায় না যে আপ্নি ভাই!..
শুষ্কমুখে আঁধার ধোঁয়া
কঠিন হেন কোথায় বল্,
লাগ্লে যাতে হাসির ছোঁয়া
আপ্নি গলে হয় না জল।।
কত বড়
ছোট্ট সে একরতি ইঁদুরের ছানা,
ফোটে নাই চোখ তার, একেবারে কানা।
ভাঙা এক দেরাজের ঝুলমাখা কোণে
মার বুকে শুয়ে শুয়ে মার কথা শোনে।
😄
যেই তার চোখ ফোটে সেই দেখে চেয়ে-
দেরাজের ভারি কাঠ চারিদিক ছেয়ে।
চেয়ে বলে মেলি তার গোল গোল আঁখি-
"ওরে বাবা! পৃথিবীটা এত বড় নাকি?"
আদুরে পুতুল
যাদুরে আমার আদুরে গোপাল, নাকটি নাদুস থোপ্না গাল,
ঝিকিমিকি চোখ মিট্মিটি চায়, ঠোঁট দুটি তায় টাট্কা লাল ।
মোমের পুতুল ঘুমিয়ে থাকুক্ দাঁত মেলে আর চুল খুলে-
টিনের পুতুল চীনের পুতুল কেউ কি এমন তুলতুলে ?
গোব্দা গড়ন এমনি ধরন আব্দারে কেউ ঠোঁট ফুলোয় ?
মখমলি রং মিষ্টি নরম- দেখ্ছ কেমন হাত বুলোয় !
বল্বি কি বল্ হাব্লা পাগল আবোল তাবোল কান ঘেঁষে,
ফোক্লা গদাই যা বলবি তাই ছাপিয়ে পাঠাই "সন্দেশে"
।
ও বাবা
পড়তে বসে মুখের কাছে কাগজখানি থুয়ে
রমেশ ভায়া ঘুমোয় পড়ে আরাম ক'রে শুয়ে ।
শুনছ নাকি ঘড়র ঘড়র নাক ডাকার ধূম ?
সখ যে বড় বেজায় দেখি- দিনের বেলায় ঘুম !
বাতাস পোরা এই যে থলি দেখ্ছ আমার হাতে,
দুড়ম করে পিট্লে পরে শব্দ হবে তাতে ।
রমেশ ভায়া আঁৎকে উঠে পড়্বে কুপোকাৎ
লাগাও তবে- ধূমধারাক্কা ! ক্যাবাৎ !
ক্যাবাৎ !
ও বাবারে ! এ কেরে ভাই ! মারবে নাকি চাঁটি ?
আমি ভাবছি রমেশ বুঝি ! সব করেছে মাটি !
আবার দেখ চোখ পাকিয়ে আস্ছে আমায় তেড়ে-
আর কেন ভাই ? দৌড়ে পালাই, প্রাণের আশা ছেড়ে !
কি মুস্কিল
সব লিখেছে এই কেতাবে দুনিয়ার সব খবর যত,
সরকারী সব অফিসখানার কোন্ সাহেবের কদর কত৷
কেমন ক'রে চাট্নি বানায়, কেমন ক'রে পোলাও করে,
হরেক্ রকম মুষ্টিযোগের বিধান লিখছে ফলাও ক'রে৷
সাবান কালি দাঁতের মাজন বানাবার সব কায়দা কেতা,
পূজা পার্বণ তিথির হিসাব শ্রাদ্ধবিধি লিখছে হেথা৷
সব লিখেছে, কেবল দেখ পাচ্ছিনেকো লেখা কোথায়—
পাগলা ষাঁড়ে কর্লে তাড়া কেমন ক'রে ঠেকাব তায়!
খোকার ভাবনা
মোমের পুতুল লোমের পুতুল আগ্লে ধ'রে হাতে
তবুও কেন হাব্লা ছেলের মন ওঠে না তাতে?
একলা জেগে একমনেতে চুপ্টি ক'রে ব'সে,
আন্মনা সে কিসের তরে আঙুলখানি চোষে?
নাইকো হাসি নাইকো খেলা নাইকো মুখে কথা,
আজ সকালে হাব্লাবাবুর মন গিয়েছে কোথা?
ভাব্ছে বুঝি দুধের বোতল আস্ছে নাকো কেন?
কিংবা ভাবে মায়ের কিসে হচ্ছে দেরী হেন।
ভাব্ছে এবার দুধ খাবে না কেবল খাবে মুড়ি,
দাদার সাথে কোমন বেঁধে করবে হুড়োহুড়ি,
ফেল্বে ছুঁড়ে চামচটাকে পাশের বাড়ির চালে,
না হয় তেড়ে কামড়ে দেবে দুষ্টু ছেলের গালে।
কিংবা ভাবে একটা কিছু ঠুক্তে যদি পেতো—
পুতুলটাকে করত ঠুকে এক্কেবারে থেঁতো।
জালা - কুঁজো সংবাদ
পেটমোটা জালা কয়, "হেসে আমি মরিরে
কুঁজো তোর হেন গলা এতটুকু শরীরে!"
কুঁজো কয়, "কথা কস্ আপনাকে না চিনে,
ভুঁড়িখানা দেখে তোর কেঁদে আর বাঁচিনে।"
জালা কয়, "সাগরের মাপে গড়া বপুখান,
ডুবুরিরা কত তোলে তবু জল অফুরান।"
কুঁজো কয়, "ভালো কথা ! তবে যদি দৈবে,
ভুঁড়ি যায় ভেস্তিয়ে, জল কোথা রইবে?"
"নিজ কথা ভুলে যাস?" জালা কয় গর্জে,
"ঘাড়ে ধরে হেঁট ক'রে জল নেয় তোর যে।"
কুঁজো কয়, "নিজ পায়ে তবু খাড়া রই তো-
বিঁড়ে বিনা কুপোকাৎ, তেজ তোর ঐতো।"
টিক্ টিক্ টং
টিক্ টিক্ চলে ঘড়ি, টিক্ টিক্ টিক্,
একটা ইঁদুর এল সে সময়ে ঠিক।
ঘড়ি দেখে একলাফে তাহাতে চড়িল,
টং করে অমনি ঘড়ি বাজিয়া উঠিল।
অমনি ইঁদুরভায়া ল্যাজ গুটাইয়া,
ঘড়ির উপর থেকে পড়ে লাফাইয়া।
ছুটিয়া পালায়ে গেল আর না আসিল,
টিক্ টিক্ টিক্ ঘড়ি চলিতে লাগিল।।